স্বদেশ ডেস্ক:
বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া চিঠিটি নুসরাত জাহান রাফিরই লেখা বলে আদালতকে জানিয়েছেন পিআইবির চট্টগ্রাম বিভাগীয় এএসপি রণজিৎ কুমার। বহুল আলোচিত ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলায় গতকাল রবিবার সাক্ষ্য দিতে এসে তিনি বলেন, ‘যে চিঠি নুসরাতের বাড়ি থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে, সেটির লেখার সঙ্গে ওর হাতের লেখার মিল রয়েছে।’
এ বিষয়ে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল পিআইবির হস্তলিপিবিষয়ক কর্মকর্তা মো. শামসুল আলমের। কিন্তু তিনি হজে থাকায় তার পরিবর্তে সাক্ষ্য দেন এএসপি রণজিৎ কুমার। ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশীদের আদালতে তার সাক্ষ্য ও জেরা অনুষ্ঠিত হয়। আজ সাক্ষ্য দেবেন সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন ও নুসরাতের মৃত্যু সনদ দেওয়া ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ডা. ওবায়দুল ইসলাম।
আবেগঘন ওই চিঠিটি নুসরাতের পড়ার টেবিল থেকে জব্দ করা হয়। চিঠিতে দিন তারিখ উল্লেখ না থাকলেও নিজ মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার কাছে যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার পর যে তিনি চিঠিটি লিখেছেন, সে বিষয়টি স্পষ্ট। এমনকি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই শিক্ষক গ্রেপ্তার হলে তার পক্ষে সহপাঠীদের কর্মসূচি পালন তাকে মর্মাহত করেছিল, চিঠিতে সে বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন। তামান্না ও সাথী নামে দুই সহপাঠীকে উদ্দেশ্য করে লেখা এ চিঠি থেকে জানা যায়, এ ঘটনার কারণে নুসরাত একবার আত্মহত্যাও করতে গিয়েছিলেন। আবেগঘন ওই চিঠিতে তিনি নিপীড়নকারী শিক্ষকের শাস্তি দিতেও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন।
সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাতকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ আনেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। মামলাটি তুলে না নেওয়ায় গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে কৌশলে ডেকে পাশের ভবনের তিন তলার ছাদে নিয়ে গ্রেপ্তার অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে গত ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুবরণ করেন নুসরাত।